কনিকা গ্রামের মেয়ে,ছোট বেলাতেই মা
বাবা মারা যায়,মামার বাড়িতেই মানুষ হয়েছে,মামির অত্যাচারে পড়াশুনা কিছুই তেমন করতে
পারে নি।মাত্র ১৭ বছর বয়সে কনিকার বিয়ে দিয়ে দেয়। ছেলেটা কোন একটা মস্তান দলের
সাথে যুক্ত ছিল,কনিকে দেখে ছেলেটার খুব পছন্দ হয়ে গেল।কনির মামি ১০ হাজার টাকা
নিয়ে ছেলেটার সাথে কনির বিয়ে দিয়ে দিল।
বিয়ের পর ছেলেটা কনিকে নিয়ে
কলকাতাতে চলে এল।ছেলেটা প্রতিদিনই মদ্ খেয়ে ফিরত,মাঝে মাঝে কনিকে মারধরও করত।কনি
মুখ বুঝে সহ্য করতে লাগল।এই ভাবেই ১ বছর খানিক পর কনির একটা ছেলে হল। কনি ছেলের
মুখ চেয়ে সব কষ্ট সহ্য করতে লাগল।
এরপর দুবছর কেটে গেল কনির আবার পেট
হয়ে গেল,কনি যখন ৪ মাসের পেটে,একদিন তার স্বামী আর একটা বিয়ে করে নিয়ে এল।সেই
মেয়েটার বয়সও ১৭-১৮ হবে,গায়ের রঙ কালো কিন্তু শরীরটা ছেলেদের নজর কাড়া।কনির স্বামী
কনিকে বলল-এই ঘরটা সাজিয়ে দে আজ নতুন বউয়ের সাথে ফুলশ্যাজা করব।কনি ঘর ঠিক করে
দিয়ে মেয়েকে নিয়ে বাইরে শুয়ে পড়ল।
পরের দিন থেকে কনি নিজের বাড়িতে
চাকরের মতো কাজ করতে লাগল,তার স্বামী আর তার দিকে ফিরেও তাকায় না।কিছুদিন পর একদিন
রাতে তারা দুজনে মদ্ খেতে বসেছে,কনি প্রতিদিন মদ্ ঢেকে সব গুচিয়ে দেয়,সেদিন
ছেলেটে খুব কান্না করছিল তাই গোচাতে একটু দেড়ি হয়ে গেল।নতুন বউ তার স্বামীকে বলল-এ
কোন কাজের না,এটাকে বাড়িতে পুশে না রেখে বার করে দাও না।কনির স্বামী বলল-মাগীকে তো
কবে বার করে দিতাম শুধু বাচ্চাটার বাচ্চাটা জন্য।নতুন বউ বলল-কেন আমি বুঝি বাচ্চা
দিতে পারব না,তুমি ওকে এখুনি বার করে দাও বলছি।কনির স্বামীও কনিকে সেই
রাত্রি বেলাতেও ঘাড় ধাক্কা দিয়ে বার করে দিল।কনি অনেক কান্নাকাটি করল,হাতে পায়ে
পড়ল কিন্তু তার কোন কথা শোনা হল,বাচ্চাটা দিয়ে তাকে বার করে দিল।
কনি সারারাত বাচ্চাটাকে নিয়ে বাড়ির
বাইরে কাটিয়ে সকালের ট্রেন ধরে মামার বাড়ি পৌছল,মামি বলল-তোকে বিয়ে দিয়ে দিয়েছি
আমাদের কাজ শেষ হয়ে গেছে,এখন তোর কোন ঝামেলা আমরা বইতে পাড়ব না।কনি হতাশ হয়ে ফিরে
এল।
সারাদিন কিছু
খায় নি,কলকাতাতে ফিরে স্টেশনেই বসে রইল।কোথায় যাবে কিছুই জানা নেই।সারাদিন
কেটে,লোকজনের ভিড়ও কেটে গেল।নিস্তব্ধ স্টেশনে কনি একা একা ছেলেটাকে নিয়ে বসে
ফুফিয়ে কাদছে।
কনির কান্না
লক্ষ্য করে এক বয়স্ক লোক বয়স ৬০-৬৫ হবে নাম বাবু,কনির দিকে এগিয়ে এল।কনিকে
বলল-তুমি কে, এতরাত্রে এখানে বসে কাদছ।কনি কেদেই চলল,লোকটা অনেক বোঝানোর পর কনি
তার সমস্ত কাহিনী বলল।লোকটা শুনে আফশোস করে কনির মাথায় হাত বুলিয়ে বলল-আহারে কি
আবস্থা,কনির পেটে নজর পরতেই লোকটা পেটে রাত রেখে বলল-আরে তোমার তো পেটে আর একতা
দেখছি,কমাস চলছে।কনি বলল-৬ মাস।
বাবু বলল-তোমাকে
বদমাসটা একেবারে শেষ করে ফেলেছে।কনি লোকটা হাতে পায়ে ধরে বলল-কাকাবাবু আপনি আমাকে
একটা থাকার জায়গা দিন আপনি যা কাজ দেবেন তাই করব। লোকটা অনেক ভেবে বলল-আমি তো একাই
থাকি কিন্তু...।কনি বলল-আপনি যা কাজ বলবেন তাই করে দেব।বাবু সোজাসুজি বলল-দেখ কোন
হেয়ালী না করে সোজাসুজি আমার বউ মারা গেছে ১২ বছর আগে এত বছর ধরে আমি একা,আমি
তোমার থাকা খাওয়া সব ভার নিতে পারি যদি তুমি আমার সাথে লাগাতে রাজি থাক।
Part 2
ReplyDelete